শুক্রবার ৪ জুলাই ২০২৫ - ১৪:২৮
আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী’র বিরুদ্ধে হুমকির জবাবে বিশ্বব্যাপী স্বাধীনতাকামীরা রুখে দাঁড়াবে

জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় শূরা সদস্য এবং পাকিস্তানের বিশিষ্ট রাজনৈতিক নেতা মিরাজুল হুদা সিদ্দিকী ইরানের শীর্ষ গণমাধ্যম মেহর নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ীর বিরুদ্ধে যদি কোনো ধরনের হামলার চেষ্টা করা হয়, তাহলে শুধু পাকিস্তান নয়, বরং বিশ্বের সকল স্বাধীনতাকামী মানুষ কঠোর জবাব দেবে।”

হাওজা নিউজ এজেন্সি: মিরাজুল হুদা সিদ্দিকী ৭ অক্টোবর ২০২৩-পরবর্তী অঞ্চলের ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বলেন, “তুফানল-আকসা অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকেই বিশ্ব উপলব্ধি করে যে, ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা আন্দোলনসহ সব ন্যায়সঙ্গত প্রতিরোধ সংগ্রামের পেছনে রয়েছে ইরানি ইসলামী বিপ্লবের আদর্শিক প্রেরণা। ইসরায়েল হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়ের পরিবারের উপর হামলা চালিয়ে শহীদ করে এবং এর মাধ্যমে স্পষ্ট করে দেয়—তারা জানে যে, ইরান প্রতিরোধ অক্ষের কেন্দ্রবিন্দু।”

তিনি বলেন, “১৩ জুন ইসরায়েল ইরানের বিরুদ্ধে সরাসরি আগ্রাসন চালায়। এর পাশাপাশি, দেশের ভেতরে মোসাদের দোসররা ইরানের সামরিক ও পরমাণু বিজ্ঞানীদের টার্গেট করতে চেষ্টা করে। কিন্তু আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ীর ধৈর্য, সাহসিকতা ও দূরদর্শী নেতৃত্বে ইরান সেসব ষড়যন্ত্র থেকে রক্ষা পায়। শুরুতে পরিস্থিতি ইসরায়েলের পক্ষে মনে হলেও, ইরানের পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা পুরো দৃশ্যপট বদলে দেয়। ‘আয়রন ডোম’ ধ্বংস হয়, মোসাদের ঘাঁটি আক্রান্ত হয়, আর ‘অজেয় ইসরায়েল’ নামে প্রচারিত মিথ ভেঙে পড়ে।”

মিরাজুল হুদা বলেন, “যখন ইরান পাল্টা হামলায় কাতারে অবস্থিত মার্কিন ঘাঁটি আল-উদেইদ লক্ষ্যবস্তু করে, তখন যুক্তরাষ্ট্র বাধ্য হয় যুদ্ধ থামাতে এবং কূটনৈতিক সমাধানের পথে হাঁটতে। এতে প্রমাণিত হয়—ইরান কেবল সামরিক নয়, আদর্শিক ও কৌশলগত দিক থেকেও বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী রাষ্ট্র।”

তিনি আরও বলেন, “এই সংঘাতে ইরান শুধু সামরিক শ্রেষ্ঠত্ব নয়, বরং চিন্তাশক্তি, আদর্শ ও কৌশলগত দূরদর্শিতায়ও অগ্রগামী হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে।”

তিনি বলেন, “আজকের সময়ের সবচেয়ে সম্মানিত ও প্রভাবশালী রাজনৈতিক ও ধর্মীয় নেতা হলেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী। তিনি নবী ইব্রাহিম (আ.), মূসা (আ.) ও ইমাম হুসাইন (আ.)-এর আদর্শকে জীবন্ত করে তুলেছেন। তিনি সময়ের নমরুদ ও ফিরআউনের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে হুসাইনি পতাকাকে সমুন্নত রেখেছেন।”

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হুমকির প্রসঙ্গে মিরাজুল হুদা বলেন, “যদি (নাউজুবিল্লাহ) আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ীর ওপর কোনো আক্রমণের চেষ্টা হয়, তবে শুধু পাকিস্তান নয়, গোটা দুনিয়ার মুক্তিকামী মানুষ এর তীব্র জবাব দেবে। পাকিস্তানের জনগণ তাঁর সাহস, ন্যায়বাণী ও বিপ্লবী নেতৃত্বকে গভীর শ্রদ্ধার চোখে দেখে এবং তাঁর সুস্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার জন্য সবসময় দোয়া করে। এই সমর্থন কেবল জামায়াতে ইসলামির মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়; বরং পাকিস্তানের প্রতিটি স্বাধীনচেতা নাগরিক আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ীর পাশে রয়েছে।”

সাক্ষাৎকারের শেষাংশে তিনি বলেন, “যখন বহু মুসলিম শাসক পশ্চিমা সাম্রাজ্যের সামনে মাথা নত করেছেন, তখন ইরান একা দাঁড়িয়ে উম্মতে মুসলিমার মর্যাদা, সাহস ও সম্মানের প্রতীক হিসেবে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।”

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha